Header Ads Widget

কোতোয়ালী থানার নাকের ডগায় চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা

কোতোয়ালী থানার নাকের ডগায় চলছে রমরমা দেহ ব্যবসা

কোতোয়ালী থানার আশেপাশে বেআইনি দেহ ব্যবসার অভিযোগ, প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের ভূমিকা

চট্টগ্রামের অন্যতম পুরাতন এবং গুরুত্বপূর্ণ থানা এলাকা কোতোয়ালী, যেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং নানা কর্মকাণ্ড চলে। কিন্তু সম্প্রতি ওই থানা এলাকায় বেআইনি দেহ ব্যবসার অপতৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাকের ডগায় এই ধরনের অবৈধ ব্যবসা চালু থাকায় প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে।

কোতোয়ালী থানার আশেপাশের কিছু আবাসিক হোটেল ও বাসাবাড়িতে গোপনে দেহ ব্যবসা চলছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন। তারা জানান, সন্ধ্যা নামার পরপরই এলাকায় সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে প্রতিদিন অচেনা পুরুষ এবং নারীকে ঢুকতে দেখা যায়, যারা ঘন্টা বা অল্প সময়ের জন্য কক্ষ ভাড়া নিয়ে এই বেআইনি কার্যকলাপ চালায়। নানারকম অপরাধের মধ্যে মাদক সেবন এবং দেহ ব্যবসা একটি বড় সমস্যা। মানুষ সাধারণত আবাসিক হোটেল গুলোতে রাত্রিকে রাত্রি যাপন অথবা দীর্ঘদিন থাকার জন্য যায়। কিন্তু কিছু কিছু আবাসিক হোটেল অথবা গেস্ট হাউজ নামধারী হলেও আসলে সেখানে কোন মানুষ থাকার ব্যবস্থা নেই।

ওইসব হোটেল গুলো মূলত মাদক সেবীদের আড্ডা এবং মাদক বেচাকেনা জন্যই তৈরি। সাধারণ মানুষ এখানে গেলে পরতে হয় নানারকম ঝামেলায়। বাহির থেকে দেখে বোঝার উপায় নাই যে এটি আবাসিক হোটেল। সাইনবোর্ড দেখে মানুষ যখন যায় তখনই পরে বিপদে। চট্টগ্রাম শহরের কোতোয়ালি থানা এলাকায় এরকম অনেকগুলো গেস্ট হাউজ আবাসিক হোটেল নাম দিয়ে দিদারসে চালাচ্ছে অসামাজিক কার্যকলাপ মাদক সেবন ও দেহ ব্যবসা।

এরকমই একটি আবাসিক হোটেল বি বাড়িয়া গেস্ট হাউস। এই বি বাড়িয়া গেস্ট হাউজে সবসময়ই চলে মাদক সেবন ও দেহ ব্যবসা। পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার সরকার পরিচিত এই আবাসিকের মালিক মোহাম্মদ আলী ও ফরহাদ দীর্ঘদিন যাবত চালিয়ে যাচ্ছে এই অপকর্ম।

এলাকার সচেতন নাগরিকরা জানান, অনেক দিন ধরে এই অবৈধ ব্যবসা চলে আসছে। একাধিকবার থানা পুলিশকে জানানো হলেও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের ধারণা, কিছু অসাধু পুলিশ সদস্যরাও এই অপরাধ থেকে লাভবান হচ্ছেন। ফলে অবৈধ এই ব্যবসা ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, ‘‘কোতোয়ালী থানার আশেপাশে বেশ কিছু পুরাতন আবাসিক হোটেল রয়েছে, যেখানে খদ্দেরদের আনাগোনা রাত গভীর হলে বেড়ে যায়। আমরা এই অবস্থা দেখে আতঙ্কিত। কারণ, এলাকায় নিরাপত্তার অভাব সৃষ্টি হচ্ছে এবং সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’’


এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছি এবং যেকোনো ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধে আমরা বদ্ধপরিকর। দেহ ব্যবসার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে এবং আমরা শীঘ্রই কঠোর পদক্ষেপ নেব।’’


তবে এলাকাবাসী মনে করেন, কেবল টহল বা অভিযানই যথেষ্ট নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলা এই দেহ ব্যবসা বন্ধ করতে হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোরালো এবং স্থায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দাদেরও সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে, যাতে অপরাধীদের কোনো আশ্রয় না মেলে। 


সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে পড়া এই ধরনের অপকর্ম বন্ধে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় নাগরিকদেরও ভূমিকা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

Post a Comment

0 Comments